জামালপুর সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নে ইসলামধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল শুনতে যাওয়া বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীকে অপহরণের পর গণধর্ষণের ঘটনায় আজ রোববার জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।
জানা গেছে, ওই ছাত্রী তার বিধবা মাকে সাথে নিয়ে কেন্দুয়া ইউনিয়নের দেওয়ানিপাড়া মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে আয়োজিত ইসলামধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল শুনতে গিয়ে অপহৃত হয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়। মামলাটির বাদী হয়েছেন ধর্ষিত ওই ছাত্রীর বিধবা মা। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত ২০০৩) এর ৯(৩)/৩০ ধারায় দায়ের করা ওই মামলায় কেন্দুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি ছাব্বির হোসেন আকন্দ সেতুসহ (২৩) আরও চারজন যুবকের নামে ও অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। ছাব্বির হোসেনের বাড়ি কেন্দুয়া ইউনিয়নের গোপালপুর দামেশ্বর গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান আকন্দ বেল। মামলার বাকি আসামিরা হলেন- ডেফুলিবাড়ি গ্রামের মো. রিফাত (২২), দেওয়ানিপাড়া গ্রামের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফার ছেলে মো. বাবু (২৪), মো. আফতাব উদ্দিনের ছেলে মো. মিনহাজ (২৩) ও মো. সুলতানের ছেলে মো. শাকিল (২৩)।
নির্মম যৌন নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) চিকিৎসক মো. শফিকুজ্জামান আজ রোববার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেছেন, জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফাখরিয়া ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের নারী চিকিৎসক দল আজ রোববার দুপুরে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ ও আইনসহায়ক যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। অন্য দু’জন চিকিৎসক হলেন- চিকিৎসক রোকেয়া ও চিকিৎসক সানজিদা। তিনি আরও বলেন, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় যাতে অংশ নিতে পারে সেইদিক বিবেচনায় জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ওই ছাত্রীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
মামলায় ওই ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানিপাড়া মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে আয়োজিত ইসলামধর্মীয় ওয়াজ মাহফিল শুনতে গিয়ে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ওই ছাত্রী ভাপা পিঠা কিনতে গিয়ে ওয়াজ মাহফিলের বাইরে রাস্তায় যায়। কিন্তু তার ফিরতে দেরি হওয়ায় তার মা অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের জানান। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে প্রতিবেশী বাদন নামের এক যুবকের সহযোগিতায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই ছাত্রী বাড়িতে ফিরে কান্নাকাটি করে ঘটনা খুলে বলে। ওই ছাত্রী তার স্বজনদের জানায়, ছাব্বির হোসেন আকন্দ সেতুসহ মামলায় উল্লেখিত যুবকেরা ও আরও অজ্ঞাত তিন-চারজন যুবক জোরপূর্বক তার মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে মাদরাসা মাঠ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে স্থানীয় হবি ডাক্তারের সেচপাম্প ঘরে নিয়ে যায়। অপহরণকারীদের মধ্যে ছাব্বির হোসেন আকন্দ সেতু ও মো. রিফাত তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তাদের সহযোগীরা ওই ছাত্রীর গায়ে হাত দেয় এবং মুঠোফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখে। এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। তারা ঘটনা প্রকাশ করে দিলে ওই ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় ওই ছাত্রীকে।
আমাদের আরো আপডেট তথ্য পাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করবেন।
No comments:
Post a Comment